বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

অনলাইনে কেনাকাটায় ভোগান্তি ও সমাধান

বাংলাদেশে ই-কমার্স বিজনেস এর প্রসার হওয়ার ফলে শপিং মলে কিংবা মার্কেটে এখন আর ভিড় ঠেলে যাওয়ার কোন প্রয়োজন হচ্ছে না আমাদেরঘরে বসে আরামেই যেকোনো কেনাকাটা, এমন কি বাজার পর্যন্ত করা যাচ্ছে অনায়াসেই! বাজার করার ধরন এখন পাল্টে গেছে অনলাইন শপিংয়ের জন্য।
অনলাইনে কেনাকাটায় ভোগান্তি

কথায় আছে – যত মুশকিল তত আসান! আপনি যেদিকেই তাকান এই কথার সত্যতা খুঁজে পাবেন। দেখেন বাংলাদেশের মানুষ যে হারে বেড়েছে, বিশেষ করে ঢাকার ভেতরে রাস্তাঘাটে যে অবস্থা, তাতে করে রাস্তা ঘাটে চলা কিন্তু মুশকিল হয়ে গেছে। আপনি যদি পুরান ঢাকার দিকে যান তাহলে ব্যাপারটা আর ভাল ভাবে খেয়াল করতে পারবেন। দিন নেই, রাত নেই রাস্তায় জ্যাম লেগেই আছে। ফুটপাত ধরে যে শান্তিমত হেঁটে যাবেন তারও কোন উপায় নেই। মানুষের লাইন লেগে আছে এ মাথা থেকে ওমাথা! এই অবস্থায় যদি প্রতিটি নিত্য পন্য কেনার জন্য আমাদের মার্কেটে যেতে হয়, তাহলে অবস্থা কতটা বেগতিক হতে পারে তা একবার ভাবুন তো? এক ঘন্টার কাজে দুই চার ঘন্টা লাগবে! ব্যস্ত নাগরিক জীবনে এখন প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান! তাহলে উপায় কি?
তাই মানুষই এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে! একদল লোক ই-কমার্স বিজনেসে নেমেছে। অনলাইনে পন্য অর্ডার দিয়ে কিংবা ফোনে অর্ডার করলেই বাসায় পন্য হাজির! আগে ড্রেস, জুতো, ইলেক্ট্রনিকস ইত্যাদি পন্য অর্ডার দিয়ে আনা যেত। এখন তো চাল ডাল নুনও আমরা অনলাইনে কিনতে পারছি! এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
কিন্তু এ সম্পর্কে আমাদের সম্যক ধারণা এখনও হয়নি। অনলাইনে কেনাকাটার বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। আজকের আয়োজনে আমরা সেসব দিক নিয়েই কথা বলবো। আশাকরি মন দিয়ে পড়বেন। আমরা যারা ইকমার্স বিজনেসের সাথে জড়িত কিংবা ভবিষ্যতে এই বিজনেসে যাব অথবা যারা আমরা অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকি তাদের সবার জন্যই এই পোষ্টটি খুব গুরুত্বপুর্ন।

বাংলাদেশে ইকমার্স বিজনেসের আওতা
তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অনলাইন শপিংওয়েবসাইটগুলো এমন এক প্লাটফর্ম যেখানে একই ব্যক্তি পণ্য বা সেবা কেনা ও বেচা- দুই ধরনের সুবিধাই ভোগ করতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফরেস্টার রিসার্চ ইনকরপোরেশন তাদের ২০১৩ সালে প্রকাশিত এশিয়া প্যাসিফিক অনলাইন রিটেইল ফোরকাস্ট ২০১৩ টু ২০১৮শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৩ সালে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের সম্মিলিত বাজার ছিল ৬৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ ছয় দেশের সম্মিলিত বাজার ছিল প্রায় ৩৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০১৮ সালে দাঁড়াবে ৮৫৮ বিলিয়ন ডলারে। বিশ্বজুড়ে অনলাইনে কেনাকাটার পরিমাণ বাড়ছেই। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস (আইবিএম) এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৩ সালের শেষের তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এ খাতে কেনাকাটার পরিমাণ ২০১২ সালের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। মার্কিন ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বেইন অ্যান্ড কোম্পানির এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৩ সালে অনলাইন কেনাকাটায় চিনের সাধারণ ক্রেতারা কেনাকাটা করেছে ২১ হাজার ২৪০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য বা সেবা। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের ব্যয়ের পরিমাণ ২২ হাজার ৮৭০ কোটি মার্কিন ডলার। মার্কিন বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ই-কমার্সে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভোক্তারা উত্তর আমেরিকার ভোক্তাদের চেয়ে বেশি ব্যয় করেছে। এ বছর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভোক্তারা ৫২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছে। আর উত্তর আমেরিকানরা ব্যয় করেছে ৪৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাজ্যের দ্য অফিস অব কমিউনিকেশনসের বরাতে জানা যায়, প্রতি এক সপ্তাহে গড়ে চারজন ব্রিটিশ নাগরিক অনলাইনে শপিং করেন।

২০০৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনলাইন লেনদেনকে বৈধতা দেওয়া হয়। সেই সময় থেকে এ দেশে ই-কমার্সের সূচনা হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মতে, ২০১৪ সালে দেশের জনসংখ্যার ৭২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী এবং মাত্র এক-পঞ্চমাংশ প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) তথ্য, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১৪ সালের ৭০ লাখে পৌঁছেছে। প্রযুক্তির এই অগ্রগতি অনলাইনে কেনাকাটাকে দিনকে দিন জনপ্রিয় করে তুলছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস)-এর তথ্যানুসারে, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্স ১৫০ শতাংশ বেশি বেড়েছে। ২০১০-১১ সালে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ যখন নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল তখন ই-কমার্সে মোট ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি টাকা; আর মোট ক্রেতার সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ লক্ষ। বাংলাদেশে বর্তমানে কেনাকাটার জনপ্রিয় সাইটের মধ্যে রয়েছে, বিক্রয় ডটকম, এখানেই ডটকম, Topallbrandআজকের ডিল ডটকম, চালডাল ডটকম, দারাজ ডটকম ডটবিডি, বাগডুম ডটকম, ক্লিক বিডি ডটকম, , বিপণি ডটকম, উপহারবিডি ডটকম, বিডিহাট ডটকম, সামগ্রিক ডটকম, হাটবাজার ডটকম, ইজি-বাজার ডটকম, ইউশপ ডটকম, একমাত্র ডটকম এবং কেনাকাটা ডটকম। বিশেষায়িত অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মধ্যে উল্লেখযোগ হলো জমি ও বাড়ি কেনাবেচার জন্য ই-কমার্স সাইট জার্মানির লামুডি, বিভিন্ন ধরনের যানবাহন বেচাকেনার জন্য জার্মানির কারমুডি। এসব ওয়েবসাইট থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই কেনাকাটা করা যায় জামা, জুতা, শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, গয়না, ল্যাপটপ, মোবাইল, কম্পিউটার, গাড়ি, জমিসহ নিত্যনতুন সামগ্রী। রয়েছে নিজের পুরনো জিনিসপত্র বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন ও বিক্রয়ের সুবিধা। গত বছর ওএলএক্স এবং মার্কেট রিসার্চ ফার্ম ম্যাট্রিক্সল্যাবের প্রাকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ১ কোটি ৫ লক্ষ ব্যবহৃত দ্রব্যাদি তালিকাভুক্ত করেছেন। গবেষণাটি থেকে আরও জানা যায়, বাংলাদেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা মোট যে পরিমাণ ব্যবহৃত দ্রব্যাদির শ্রেণিভুক্ত বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, তার অর্থমূল্য ১৪৭ বিলিয়ন টাকা। ওএলএক্স বাংলাদেশে ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে কার্যক্রম শুরু করে। মাত্র আট মাসে দুই লাখ ২৫ হাজারের বেশি শ্রেণিভুক্ত বিজ্ঞাপন পায় সাইটটি। গত জানুয়ারি মাসে ওএলএক্স একীভূত হয় এখানেই ডটকমের সাথে। অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিক্রয় ডটকম যাত্রা শুরুর দুই বছরের মধ্যে ৩২ লাখেরও বেশি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।

অনলাইন শপগুলোর আয়ের প্রধান উৎস কি?
এসব অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোর আয়ের অন্যতম বড় দুইটা উৎস হলো: (১) কস্ট পার লিংক (সিপিসি) বা পে পার লিংক (পিপিসি) এবং (২) কস্ট পার ভিউ (সিপিভি)। একটি ওয়েবসাইটের কোনো পৃষ্ঠায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির লিংকের মধ্যে কোনগুলোতে বেশি ক্লিক পড়েছে, তা জানা যায় সিপিসি বা ক্লিক রেটের মাধ্যমে। আর বিজ্ঞাপনে ক্লিকগুলো দেখিয়ে সাইটের মালিকরা তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনগুলো দেখাতে পারেন এবং তা থেকে সিপিভি-এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এসব ওয়েবসাইটে একজন বিজ্ঞাপনদাতা তাদের বিজ্ঞাপন দেন গুগল অ্যাডসেন্স থেকে গুগল অ্যাডওয়ার্ডসে গিয়ে। আর এই ওয়েবসাইটগুলো আয় করে গুগল থেকে।

অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে ভোগান্তি
ধরেন, আপনি পন্যের জন্য টাকা দিয়েছেন অনলাইনে বা বিকাশের মাধ্যমে, কিন্তু সাইটের মালিক বলল সে টাকা পায়নি। তখন আপনি ধরবেন কাকে? বেশিরভাগ অনলাইন সাইট নামসর্বস্ব, একজন ব্যাক্তি বাসায় বসে পরিচালনা করছে, তাদের কোন নির্দিষ্ট অফিস নাই। এই অবস্থায় তার খোঁজ পাবেন কি করে? আমাদের দেশে এখনও অনলাইন শপিংয়ের অনেক অনেক ফাঁকফোঁকর রয়ে গেছে। আর তাই প্রতিনিয়ত ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। হচ্ছেন প্রতারিত। ছবিতে পণ্যের যে লুক দেখা যায় বাস্তবে তার মিল থাকে না। এ ক্ষেত্রে পণ্য না নিতে চাইলে ডেলিভারি চার্জ দিতে হয়। আবার দাম নিয়ে রয়েছে অনেক বিভ্রান্তি। অনেক সময় বাজারমূল্য থেকে বেশি দাম পড়ে যায় অনলাইন শপ। আবার যে সময় সাশ্রয়ের জন্য অনলাইন থেকে পণ্য কেনা হয় সেই সময়টাও নষ্ট হয় পণ্য কখন ডেলিভারি দিয়ে যাবে তার অপেক্ষায় থেকে। এ ছাড়া রয়েছে কেনাকাটায় উচ্চ হার। অনলাইনে কেনাবেচা-সংক্রান্ত লেনদেনের মাধ্যম ব্যাংক। আর এ বাবদ ব্যাংক প্রতি লেনদেনে ফি কেটে নিচ্ছে ৪ শতাংশ হারে। অথচ ব্রিটেনে প্রতি ২৭টি লেনদেন বাবদ ব্যাংকগুলো ফি রাখে ৫ পাউন্ড। আমাদের দেশে ইকমার্স বিজনেসের জন্য ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া অয় নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে। তবে বেশির ভাগ বিজনেস গড়ে উঠছে কোন রকম রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই। আমরা যারা অনলাইনে কেনাকাটা করি, তারা অবশ্যই চেক করে দেখবেন যে ইকমার্স সাইটের ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া আছে কি না। তাহলে যেকোনো সমস্যায় আইনগত সাহায্য পাবেন। বাংলাদেশের অনেক বিখ্যাত অনলাইন সাইটও অনুমোদন নিয়ে বিজনেস করছে না! কিন্তু আশার কথা হচ্ছে নতুন কিছু সাইট আসছে যারা বেশ ভালভাবে রেজিস্ট্রেশন করে বড় সেট আপ নিয়ে বিজনেসে নামছে। অনেকেই আবার ব্যতিক্রমধর্মী পন্য নিয়ে স্পেশাল ইকমার্স সাইট করছে। যেমনঃ উপহার ডট কম। এরা সব ধরণের উপহার সামগ্রী বিক্রেতা। আবার টপ অল ব্র্যান্ড সাইটের কথা বলতে পারি যারা শুধু মাত্র বিদেশী পন্য বিক্রয় করেএরা অবশ্য বিশাল সেট আপ নিয়ে কাজ করে চলেছে। এদের বিশেষত্ব হলো – দেশে উৎপাদিত পন্য এরা বিক্রয় করে না, বিদেশী পণ্যের আমদানিকারক একটি সংস্থার সাথে এরা কাজ করছে এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রিটেইল কাস্টোমারদের কাছে শুধুমাত্র বিদেশী পন্য সরবরাহ করে থাকে। এছাড়া, পুরনো ইকমার্স সাইটগুলোর মধ্যে বাগডুম আমার কাছে ভাল লাগে, কিন্তু তাদের পণ্যের প্রাইস একটু বেশিআর দারাজ এর সার্ভিস ভালো না। আপনি হয়ত একই পন্য কয়েকটা সাইটে পাবেন। ভালভাবে যাচাই বাছাই করে কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন।

অনলাইন ইকমার্স বিজনেসের অনলাইনগত বৈধতা
দেশের অনলাইন শপিংয়ের ওয়েবসাইট বাড়লেও এখনো পর্যন্ত তা সুসংগঠিত নয়। নেই অনলাইনে কেনাবেচার কোনো নীতিমালা। গতানুগতিক ব্যবসার মতো অনলাইন শপ শুরু করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়। এরপর ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করে, ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়ে, প্রয়োজন অনুযায়ী হোস্টিং নিয়ে সাইট চালু করতে হয়। অনেকেই এখন ঘরে বসেই সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে নিজস্ব অনলাইন শপের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এজন্য ফেসবুক, টুইটার খুললেই একটার পর একটা বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এতে নিয়মিতই বিভিন্ন পণ্যের বিবরণ ও মান সম্পর্কে সব ধরনের খবর দেওয়া হয়। অনেকে আবার কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করে নয়, ফেসবুকের ফ্যান পেজের মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা করছেন। এভাবে বিক্রীত পণ্যের ওপর ভ্যাট দিতে হয় না। কারণ, বাংলাদেশের অনলাইন স্টোরগুলোতে মূলত নিজস্ব পণ্য থাকে না। তাই এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের বিষয়টাও খাটে না। যারা দেশের বাইরে থেকে পণ্যে অর্ডার নেন তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৭-এর ১৮/এ ধারার অনুমোদন নিতে হয়। বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৭-এর ১৮ এ এবং বি ধারায় স্থানীয় এজেন্ট বা প্রতিষ্ঠানের কমিশন, ফি, সার্ভিস চার্জসহ যাবতীয় তথ্য এবং অফিস খরচ হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগে দাখিল করতে হয়। অন্যদিকে অন্যান্য দেশে পণ্য বিক্রির সুযোগ পেতে হলেও বিক্রেতাকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ আনুষঙ্গিক তথ্য দাখিল করতে হয়। এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের পরই কেবল একজন বিক্রেতাকে পণ্য বিক্রির জন্য অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে যে কেউ ইচ্ছে করলেই অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। তাই সাবধান! লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখলেই কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না! আগে যাচাই বাছাই করে নিবেন।
আশাকরি পোষ্টটি একটু হলেও আপনার উপকার করতে পেরেছে। ধন্যবাদ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন