বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

জেনে নিন ফ্রিতে আপনার ই-কমার্স শপ কিংবা ফেসবুক পেইজ শপ মার্কেটিং করার উপায়!


ইন্টারনেটের মাধ্যমে পন্য কেনা বেচা এখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে আমরা অনেকেই এই বিজনেসে নামার জন্য আগ্রহী। এই বিজনেসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- খুব কম খরচে এবং কম শ্রমে বিজনেস শুরু করা যায়। আপনি যদি একটা ওয়েবসাইট বানাতে পারেন তাহলে খুবই ভালো, কিন্তু না পারলেও কোন সমস্যা নেই। বিনা পয়সায় একটা ফেসবুক পেইজ খুলেই বিজনেস স্টার্ট করে দিতে পারেন।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে পন্য কেনা বেচা


কিন্তু সমস্যা হোল – এই বিজনেসে যারা নামেন তাদের বেশির ভাগই লস করেন এবং এ লাইনে টিকে থাকতে না পেরে মার্কেট থেকে বেরিয়ে যান। এর পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে যথাযথ মার্কেটিং জ্ঞানের অভাব। আপনি যদি না জানেন কিভাবে আপনার পন্যটি কেনার ব্যাপারে ক্রেতাকে উৎসাহিত করবেন, তাহলে কীভাবে আপনি ভাবেন যে পন্যটি বিক্রি হবে? ক্রেতা নিশ্চয়ই হাজার পন্যের ভিড়ে আপনার পন্যটি খুঁজে খুঁজে বের করবে না? বরং যেসব বিক্রেতা তাদের সামনে এগিয়ে আসতে পারবে, তাদের মধ্য থেকেই ক্রেতা পছন্দের পন্য কিনে নিবে।

ইকমার্স বিজনেসের বিজ্ঞাপনের গুরুত্বঃ
আপনারা জানেন যে, ই-কমার্স ব্যবসা হলো অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা মানুষের সামনে তুলে ধরা ও বিক্রি করা। এ ব্যবসার প্রধান মাধ্যম অনলাইন হওয়ায় পণ্য ও সেবার মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন অনলাইনে করাটাই সবচেয়ে ভালো। তবে যত সহজভাবে এটি বলা যাচ্ছে, কাজটা ততটা সহজ নয়।
ই-কমার্স ব্যবসায়ের প্রসারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (সোশ্যাল মিডিয়া) বড় ভূমিকা পালন করে। টিনএজার থেকে শুরু করে বয়স্করা এখন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে প্রতিনিয়ত বিচরণ করেন। তাই এসব সাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য ও সেবার কাঙ্খিত ক্রেতা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় মেনে এগিয়ে যেতে হবে।
ফেসবুক, ব্লগ এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার প্রসারে করণীয় ৬টি বিষয় নিয়ে আমার আজকের এই পোষ্ট

১. বিজ্ঞাপনের প্লাটফর্মগুলো বেছে নিন
বর্তমানে শত শত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম রয়েছে। তবে সবগুলো যথাযথ কাজেরও নয়! এখন প্রশ্ন হলো, আপনার জন্য কোন প্লাটফর্মটি ভালো?
এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে বিবেচনা করতে হবে আপনার পণ্য বা সেবার ধরণ অনুযায়ী কোন প্লাটফর্মটি আপনার জন্য ভালো হবে। প্রথমে যথার্থ একটি এবং পরে আরও কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হতে পারেন।
তবে ব্যবসায়ের প্রসারে মূলত জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ সাইট যেমন ফেইসবুক, টুইটার, লিংকডইন, পিন্টারেস্ট ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবগুলোই যে ব্যবহার করতে হবে এমন কথা নেই।

২. আপনার পন্যের সম্ভাব্য ক্রেতা নির্বাচন করুন
আপনার পণ্য বা সেবার ধরণ অনুযায়ী সম্ভাব্য ক্রেতা নির্বাচন করতে হবে। এতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ব্যবসায়ের প্রসার দ্রুত হবে। আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের অধিকাংশই কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সেটি বুঝতে হবে। পাশাপাশি তাদেরকে আপনার পেইজ অথবা আইডিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।

৩. ওয়েবসাইটের যথাযথ এসইও করুন
বিষয়টি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এর সঙ্গে জড়িত। আপনার পণ্য ও সেবা অনুযায়ী মানুষ কি লিখে সার্চ করে সেটি দেখুন। তারপর এই কিওয়ার্ড অনুযায়ী এসইও প্রমোশন চালান। ইউটিউবে এই কিওয়ার্ডে আপনার পণ্য বা সেবা নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করতে পারেন। কিওয়ার্ডের উপর গুরুত্ব দিয়ে কনটেন্ট লিখে সেটির প্রমোশন চালাতে পারেন। এটি সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার কাঙ্খিত ভিজিটর এনে দিবে।

৪. নিয়মিত নানা রকমের আকর্ষণীয় অফার দিন
পণ্য বা সেবা গ্রহণে দারুণ সব অফার দিন। ছাড় ও উপহার দিতে পারেন। এগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ দিবস উপলক্ষ্যেও এসব প্রচারণা চালানো যেতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতা, শেয়ার প্রতিযোগিতা ইত্যাদি করা যেতে পারে।

৫. ব্লগে আপনার পন্যের ব্যাকলিংক ক্রিয়েট করুন
ই-কমার্স ব্যবসায় ব্লগিংয়ের মাধ্যমেও প্রচার, প্রসার সম্ভব। ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্খিত ক্রেতাদের সম্পৃক্ত করতে পারেন। আর এই ব্লগ পোস্ট অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার করবেন। তবে পোস্টটি প্রমোশনাল না হয়ে তথ্যভিত্তিক ও মানুষের প্রয়োজনে লাগে এমন বিষয়ে ফোকাস করলে ভালো হয়।

নিজস্ব ব্লগ থাকলে অনেক বেশি ভাল হয়। যেমন ধরেন Topallbrand সাইট। তাদের আছে একটি লাইফস্টাইলভিত্তিক ব্লগ – টপঅলব্র্যান্ড ব্লগযেখানে নিয়মিত দারুণ দারুণ আর্টিকেল পাবলিস করা হয়। এতে করে ভিজিটর বাড়ে। এ থেকে সাইটের প্রতি মানুষের ভালোবাসা বাড়ে এবং মানুষ কেনাকাটা করার জন্য সাইটকে বিশ্বস্ত ভাবে। নিজস্ব ব্লগ যদি না থাকে তাহলে বাংলাদেশের প্রথম সারির ব্লগগুলোতে লেখালেখি করুন। যেমনঃ সামহোয়ারইন ব্লগ, টেকটিউন্স, টিউনার পেইজ, নক্ষত্র ব্লগ, চতুর্মাত্রিক ব্লগ ইত্যাদি। এসব যায়গায় লেটেস্ট ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল নিয়ে পোষ্ট করুন এবং পোষ্টে নিজের সাইটের পন্যের লিংক দিন। অনেকেই সেই লিংক ধরে পন্যটি কিনতে আসবে।
ব্লগের পোষ্টের টাইটেলের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো ও আকর্ষনীয় টাইটেল দিবেন। ভালো ভালো পোস্টের মাধ্যমে নিয়মিত ব্লগ আপডেটেড রাখবেন। ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আকর্ষনীয় ছবি দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

. সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রি ও পেইড বিজ্ঞাপন দিন
এটা সবচেয়ে ইফেক্টিভ। আপনি যে পণ্যই বিক্রয় করে থাকেন না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে যে রেজাল্ট পাবেন তা অন্য কোন ভাবে সম্ভব নয়! ফেসবুক পেইজের পোষ্ট গুলি পেইড বুস্ট দিলে অনেক পন্য সেল হয়ে যায় সাধারণত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিজ্ঞাপন দিলেই কি পন্য সেল হবে? না, বিজ্ঞাপন কীভাবে ইফেকটিভলি দিতে হয় সেটাও শিখতে হবে আপনাকে। এই জন্য অবশ্য কারো কাছে শিখতে যেতে হবে না! আপনি ইউটিউবে কিছু ভিডিও দেখে কিংবা গুগলে “How to advertise in Facebook effectively” লিখে সার্চ করে অনেক আর্টিকেল পাবেন। এইসব আরটিকেল পড়ে নিতে পারেন।


আজ এই ছয়টি উপায় নিয়ে বললাম। এই ছাড়াও অসংখ্য উপায় আছে যা ব্যবহার করে আপনি আপনার পন্যের মার্কেটিং করতে পারবেন। সে উপায়গুলো নিয়ে আর একদিন আলোচনা করব।


ক্লিক করে জেনে নিন আরও অজানা তথ্য

ক্লিক করে জেনে নিন আরও অজানা তথ্য

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন